দুষ্কৃতীদের উন্মত্ত তাণ্ডবে একাধিক দোকানপাট ও বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হামলায় রক্তাক্ত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মহেশতলা জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে, মহেশতলার রবীন্দ্রনগরের এই এলাকায়, ২ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষের জেরে এলাকার একাধিক বাড়িতে তাণ্ডব চালানো হয়। ভাঙচুর চালানো হয় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে। একটি গাড়ি নয়, একাধিক গাড়ি ভাঙচুর। একের পর এক বাড়ির জানলার কাচ ভাঙচুর।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে শুরু হয় ইঁটবৃষ্টি, পাথর ছোড়া। রেহাই পাননি মহিলা কনস্টেবলরাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাল্টা টিয়ার গ্যাসের সেল ছোঁড়ে পুলিশ। লাঠিচার্জ করতে হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোটা এলাকা বিশাল বাহিনীতে মুড়ে ফেলা হয়।
এদিকে, মহেশতলার এই নজিরবিহীন নৈরাজ্যের খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। আজ সকালে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রতিনিধিদল রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়। তারা মহেশতলার এই পরিস্থিতিকে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হিসেবে আখ্যায়িত করে অবিলম্বে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
যদিও শাসকদলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন এবং এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কড়া শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মহেশতলার এই ঘটনা রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। আগামী দিনে এই ঘটনার রেশ কতটা দূর গড়াবে, তা বলা কঠিন। তবে জনমনে যে তীব্র ভীতি ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, তা স্পষ্ট।