সম্প্রতি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাংলার কোভিড পরিকাঠামো নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরা হয়। কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা দাবি করেন, রাজ্যে পর্যাপ্ত কোভিড বেড নেই, অক্সিজেন সাপ্লাই সীমিত, অনেক হাসপাতালেই চিকিৎসা পরিষেবা ঠিকঠাক নেই এবং সংক্রমণের প্রকৃত পরিসংখ্যান গোপন করা হচ্ছে। অথচ রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য বলছে, কোভিডের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ঢেউ সামাল দিতে বাংলার ভূমিকা ছিল যথেষ্ট কার্যকর। জেলা এবং মহকুমা স্তরে কোভিড কেয়ার সেন্টার, র্যাপিড রেসপন্স টিম, বাড়ি বাড়ি ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, টেলিমেডিসিন সার্ভিস চালু করাসহ একাধিক পদক্ষেপ রাজ্য সরকার নিয়েছিল, যা সারা দেশে প্রশংসিত হয়। স্বয়ং কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ববর্তী রিপোর্টেই পশ্চিমবঙ্গের ভ্যাকসিনেশন কভারেজ, রিকভারি রেট ও মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণের প্রশংসা করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের মুখে কেন্দ্রের হঠাৎ এই মনোভাব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই হয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা। তাঁদের মতে, রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করে বাংলায় রাজনৈতিক ময়দান দখলের লক্ষ্যে কেন্দ্র এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কোভিড মোকাবিলায় রাজ্যের ভূমিকার বিষয়ে বারবার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের তৎপরতা, প্রশাসনের জবাবদিহি ও জনগণের সহায়তাকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্র সরকার বারবার রাজ্যের প্রকৃত সাফল্যকে অস্বীকার করে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য তুলে ধরছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক মুখপাত্র জানান, কেন্দ্রের অভিযোগকে ভিত্তিহীন প্রমাণ করতে রাজ্য খুব শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ তথ্যসহ রিপ্লাই পাঠাবে। তৃণমূলের কটাক্ষ, নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতেই কেন্দ্র বাংলার বিরুদ্ধে ‘কুৎসার রাজনীতি’ করছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে স্বাস্থ্য পরিসেবার সুবিধা পাওয়া বহু পরিবারও এই অপপ্রচারে ক্ষুব্ধ। স্বাস্থ্য বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এই ধরনের অভিযোগ রাজ্য ও কেন্দ্রের সহমর্মিতার পরিবর্তে এক রাজনৈতিক সংঘাতের জন্ম দিচ্ছে, যার খেসারত দিতে হতে পারে জনগণকেই।