চাকরি বাতিল মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনল রাজ্য সরকার
টেট চাকরি বাতিল মামলায় রাজ্যের পক্ষ থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে চাঞ্চল্য ছড়াল। রাজ্যের দাবি, বিচারপতি ‘খেয়ালখুশি মতো’ শুনানি পরিচালনা করেছেন এবং নিরপেক্ষতার পথ থেকে সরে গিয়ে মামলার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা উঠেছিল। রাজ্য তথা পর্ষদের তরফে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তিনি বলেন, 'সিঙ্গেল বেঞ্চের তৎকালীন বিচারপতি সঠিক পদ্ধতি মেনে বিচার করেননি। শুনানি পদ্ধতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন আছে। সিঙ্গেল বেঞ্চ সবাইকে বলার সুযোগ দেয়নি। খেয়ালখুশি মতো শুনানি পর্ব চালিয়ে গিয়েছেন বিচারপতি'।
এজির আরও অভিযোগ, এই মামলায় মামলাকারীদের বক্তব্য শোনার পর শুনানি স্থগিত করে দেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর পর্ষদের থেকে হলফনামা তলব করেন। অথচ এই একই আবেদন তিনি আগে খারিজ করে দিয়েছিলেন।
প্রাথমিকে ৩২,০০০ চাকরি বাতিল মামলায় শুনানি শেষের পরের দিনই রায় ঘোষণা নিয়ে সওয়াল করেন এজি। তাঁর প্রশ্ন, 'এত তাড়াহুড়ো কীসের ছিল?' পর্ষদ আগেই দাবি করেছিলেন, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রে কেবলমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। রাজ্যের এজির দাবি, এই দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য কোনও তথ্যপ্রমাণ সামনে আসেনি। দুর্নীতির অভিযোগ আনার পরিনাম মারাত্মক। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেবলমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে দুর্নীতির কথা লিখে দিলেন বিচারপতি। এজির অভিযোগ, এই মামলার শুনানিতে নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার কাজ করেছে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। আইনকে সরিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় ৩২,০০০ চাকরি বাতিলের পিছনে 'অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট' না নেওয়ার কারণ দেখানো হয়েছিল। পর্ষদের দাবি, এহেন অভিযোগের কোনও গুরুত্ব নেই। জেলা অনুযায়ী মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। ওই টেস্টও সেই অনুসারে নেওয়া হয়।
একথা শুনে বিচারপতি চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, এখন আপনারা বলছেন মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। তবে এর আগে আপনারাই প্রকাশিত হয়নি বলে জানিয়েছিলেন। আপনাদের কোন অবস্থান সঠিক? সেই সঙ্গেই পর্ষদের উদ্দেশে প্রশ্ন, ওএমআর শিট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কেন বাইরের সংস্থাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল? ওই সংস্থা কীভাবে মূল্যায়নের বরাত পেল? প্রথমে কেন অন্য কেউ বরাতের বিষয়ে জানল না? কোন আইনের ভিত্তিতে তাদের বরাত দেওয়া হল?