কর্মী ও প্রশাসনিক সংস্কার বিভাগের তরফে মে মাসের শেষ দিকে রাজ্যের প্রতিটি দফতরের সচিবকে পাঠানো এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে: সুপ্রিম কোর্ট কিংবা হাই কোর্টের নির্দেশে গড়া সব সরকারি কমিটির সংযোজন, কার্যাবলী, বৈঠক সংখ্যা ও রিপোর্ট জমা‑দানের তথ্য আগামী সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে। কোন কোন দফতরে কতটি কমিটি গঠিত হয়েছে, প্রতিটি কমিটিতে কারা রয়েছেন (সরকারি আমলা ও বাহ্যিক বিশেষজ্ঞসহ), কমিটির কাজের অগ্রগতি, বৈঠকের সংখ্যা ও হতে পারে সে রিপোর্ট জমা পড়েছে কিনা—সব তথ্যসহ বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে হবে ।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নবান্ন করছেন পূর্ণ প্রস্তুতি, আদালতে কোর্ট‑নির্দেশিত কার্যক্রম যথাসময়ে রিপোর্টিং প্রমাণ করতে হবে। এক কর্তার বক্তব্য, “আমাদের লক্ষ্য একটা তথ্যভান্ডার তৈরি করা, যাতে ভবিষ্যতে যদি আদালত‑জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে রাজ্য সরকার তা যথাযথভাবে পালন করেছে—এই স্পষ্ট প্রমাণ আমরা দিতে পারি”।
যদিও সরকারিভাবে রাশ নেওয়ার কোনো কারণ স্পষ্টভাবে বলা হয়নি, প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মূল ইচ্ছে হলো— বোঝাতে হবে যে, রাজ্য আদালতের নির্দেশ যথাযথভাবে মানছে। এছাড়া, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ, স্বাস্থ্য, নারী‑শিশু সুরক্ষা, রোড সেফটি ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে গঠিত কমিটির কার্যকারিতা ও রিপোর্ট‑রহণ নিয়েও নজরদারি বাড়ছে।
আদালতের নির্দেশের প্রচারসুপ্রিম ও হাই কোর্ট‑নির্দেশিত সকল কমিটি সরকারের নজরে আছে—এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করার প্রয়াস। তথ্যভান্ডার তৈরির লক্ষ্যপ্রতিটি কমিটির গঠন, কার্যক্রম, বাহ্যিক অংশগ্রহণ ও রিপোর্টিং সঠিকভাবে রেকর্ড করে নবান্নে একন্ট্রোল সিস্টেম তৈরি। ভবিষ্যতের কৌশলগত প্রস্তুতিভোটের আগে যদি কোনো আইনি দ্বন্দ্ব বা চ্যালেঞ্জ উঠে আসে—তারা তা মোকাবিলার জন্য সব তথ্য প্রস্তুত রাখতে চাইছেন।
সমস্ত দফতরের সচিবকে এখন ঐকান্তিক মনোযোগ দিতে হবে—তথ্য জমা, বৈঠকের খাতা, বৈদেশিকদের নাম ইত্যাদি। বাহ্যিক কমিটির সদস্যদের কাছে তথ্যমূলোক প্রশ্নোত্তর, বৈঠক আয়োজন ও রিপোর্ট তৈরি নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক চাপ বেড়ে যাবে।কারণ সময়মতো সকল ডেটা প্রস্তুত করতে হবে।
নবান্নের হুঁশিয়ারি আসলে আদালতের নির্দেশ পালনের স্বচ্ছতা ও প্রস্তুতি। ভোটবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কোথাও কোনও ফাঁক না রাখতেই উদ্যোগী হচ্ছে সেক্রেটারি‑স্তরের পর্যবেক্ষণ, যাতে কোনো ধরিয়ে রাখা জায়গা না থাকে। এবারের পদক্ষেপ রাজ্যস্তরে প্রশাসনের কাছে এক ধরনের পদ্ধতিগত নির্দেশ হয়নি,তবে তার ফলস্বরূপ প্রশাসক দফতরের দিকনির্দেশক মনোযোগ অনেক বেশি তীক্ষ্ণ হয়ে উঠছে।