সম্প্রতি কুষ্টিয়ার শিলাইদহে অবস্থিত তাঁর পৈত্রিক কুঠিবাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। 'স্বাধীন' বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা এবং তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণে রাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এই ঘটনা।
রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটি এর আগেও বিভিন্ন সময় অবহেলা ও অযত্নের শিকার হয়েছে। তবে এবারের ভাঙচুরের ঘটনা তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে সংস্কৃতি মহলে। অভিযোগ উঠেছে, একদল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। যদিও এর পেছনে কী উদ্দেশ্য ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে বাইক পার্কিংয়ের ফি নিয়ে কাছারি বাড়ি সংগ্রহশালার এক কর্মীর সঙ্গে এক দর্শকের বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, ওই দর্শককে সংগ্রহশালার ভিতরে নিয়ে আটকে রাখা হয় এবং মারধর করা হয়। এরপরেই উত্তেজনা ছড়ায়। উন্মত্ত জনতা শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। এরপরেই রবীন্দ্রনাথের পৈত্রিক বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।
উন্মত্ত জনতা কাছারিবাড়িতে ঢুকে কাস্টডিয়ানের অফিস, অডিটোরিয়ামের জানালা, দরজা ভাঙচুর করে। বেশ কিছু মূল্যবান সামগ্রীর ক্ষতি হয়েছে। সংগ্রহশালার অধিকর্তাকেও মারধর করা হয়। এই ঘটনার পর দর্শকদের জন্য কাছারি বাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ, বাংলাদেশে এখন রবীন্দ্রনাথের একমাত্র পরিচয় হিন্দু ও ভারতীয় কবি। যিনি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা, তাঁকেই এখন ব্রাত্য করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবিও উঠেছে।