টেস্টের আয়ু কমছে? আইসিসি-র নয়া ভাবনা, ভারতকে বিশেষ সুবিধা! ঐতিহ্য না বদল?
ক্রিকেটের দীর্ঘতম এবং ঐতিহ্যবাহী ফরম্যাট টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) টেস্ট ম্যাচের সময়কাল কমানোর বিষয়ে সক্রিয়ভাবে চিন্তাভাবনা করছে বলে খবর।
এর ফলে পাঁচ দিনের টেস্টের সুদীর্ঘ ঐতিহ্য কি ধীরে ধীরে অতীত হয়ে যাবে, সেই প্রশ্ন উঠছে ক্রিকেট মহলে। তবে এই প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মাঝেও ভারতকে একটি বিশেষ ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, যা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। আইসিসি টেস্ট ক্রিকেটকে আরও আকর্ষণীয় এবং দর্শকপ্রিয় করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নিতে চাইছে। বর্তমান সময়ে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের বাড়বাড়ন্তে টেস্টের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ কিছুটা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে, যে ম্যাচগুলি দ্রুত শেষ হয়ে যায় বা যেখানে ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যায়, সেই ম্যাচগুলিতেই দর্শকদের ভিড় বেশি দেখা যায়। এই ধারণার উপর ভিত্তি করেই আইসিসি টেস্টের সময়কাল কমানোর কথা ভাবছে। তবে এই প্রস্তাবিত পরিবর্তনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো ভারতকে দেওয়া বিশেষ ছাড়। সূত্রের খবর, ভারতীয় ক্রিকেট দল চাইলে পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচ খেলা চালিয়ে যেতে পারবে। এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, ভারতীয় দল টেস্ট ক্রিকেটে বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের আধিপত্য বজায় রেখেছে এবং এই ফরম্যাটে তাদের একটি বিশাল ফ্যান বেস রয়েছে। ভারতের টেস্ট ম্যাচগুলি প্রায়শই উত্তেজনাপূর্ণ হয় এবং প্রচুর দর্শক আকর্ষণ করে। তাই, ভারতের জন্য এই ছাড় একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারে, যাতে ঐতিহ্যবাহী ফরম্যাটের প্রতি ভারতীয় ক্রিকেটের অবদান অক্ষুণ্ণ থাকে। যদি এই প্রস্তাব কার্যকর হয়, তবে এটি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে। পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচ তার কৌশলগত গভীরতা, ধৈর্য এবং মানসিক দৃঢ়তার জন্য পরিচিত। এর আয়ু কমালে খেলার ধরনে বড়সড় পরিবর্তন আসতে পারে। ম্যাচের গতি বাড়তে পারে, দলগুলো আরও আক্রমণাত্মক হতে পারে এবং ড্রয়ের সংখ্যা কমে যেতে পারে। তবে এর ফলে কি টেস্ট ক্রিকেটের 'কৌলিন্য' বা ঐতিহ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সেই প্রশ্নও উঠছে। ক্রিকেটপ্রেমীরা এবং প্রাক্তন ক্রিকেটারদের মধ্যে এই বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এক পক্ষ যেখানে টেস্টের আধুনিকীকরণকে স্বাগত জানাচ্ছে, সেখানে অন্য পক্ষ দীর্ঘ ফরম্যাটের ঐতিহ্য ধরে রাখার পক্ষে সওয়াল করছে। এখন দেখার বিষয়, আইসিসি এই বিষয়ে চূড়ান্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং ভারতের জন্য এই বিশেষ ছাড় শেষ পর্যন্ত বহাল থাকে কিনা। টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এখন আইসিসি-র সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল, যা লাল বলের ক্রিকেটের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।