পশ্চিমবঙ্গে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা, সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৬০০ ছাড়ালো; দেশজুড়ে ৫০০০ এর বেশি আক্রান্ত
ভারতে দ্রুত বাড়ছে করোনাভাইরাসের সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে বর্তমানে ৫,৭৫৫ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের করোনা চিত্রও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। রাজ্যে সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে, যা রাজ্যকে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ সক্রিয় কেসযুক্ত রাজ্যে পরিণত করেছে। শনিবারের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে ৫৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর ফলে রাজ্যে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২২। কেরালা, গুজরাট এবং দিল্লির পরেই পশ্চিমবঙ্গ এখন সর্বোচ্চ সক্রিয় রোগীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। কলকাতায় সক্রিয় কেসের সংখ্যা গত মে মাসের শেষ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দুজন শিশু, যার মধ্যে একজন ১০ মাসের এবং অন্যজন দুই বছরের, কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ইএম বাইপাসের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ১০ মাসের শিশুটি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও, কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষার জন্য বিশেষ কাউন্টার খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগকে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি, হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এবং তাদের অবস্থা সম্পর্কে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্তদের মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার মতো সুরক্ষাবিধি মেনে চলার উপর জোর দিচ্ছেন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আইডেন্টিফিকেশন হাসপাতালে দুটি আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যদি আক্রান্তের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়। উল্লেখ্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লুকানোর অভিযোগ করলেও, রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রাজ্য সরকারের অধীনে। দেশজুড়ে এই বৃদ্ধির পেছনে নতুন ভ্যারিয়েন্ট, যেমন এনবি.১.৮.১ এবং এলএফ.৭ এর ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এনবি.১.৮.১ স্ট্রেনটিকে 'ভ্যারিয়েন্ট আন্ডার মনিটরিং' হিসেবে ঘোষণা করেছে। নাগরিকদের সতর্ক থাকতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।