পার্ক স্ট্রিটের হোটেলে 'সিবিআই' সেজে ২৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, গ্রেফতার ৮
কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের একটি বিলাসবহুল হোটেলে কেন্দ্রীয় সরকারি এক পদস্থ কর্তাকে 'ডিজিটাল-বন্দি' করে ২৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আটজনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার। এই ঘটনা শহরজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর পরিচয় দিয়ে একদল দুষ্কৃতী পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেলে প্রবেশ করে। তারা সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্তাকে নিজেদের টার্গেট করে। অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা নিজেদের সিবিআই আধিকারিক পরিচয় দিয়ে ওই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্তার ঘরে প্রবেশ করে। এরপর তারা তাকে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগের ভয় দেখিয়ে 'ডিজিটাল-বন্দি' করে ফেলে। অর্থাৎ, তাকে তার ফোন ব্যবহার করে অনলাইন মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে। জানা গেছে, ভয় দেখিয়ে ওই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্তার কাছ থেকে ধাপে ধাপে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। টাকা ট্রান্সফার হয়ে গেলে তারা হোটেল থেকে পালিয়ে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্তা দ্রুত পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে। বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে এবং প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে পুলিশ আটজন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, এটি একটি সুসংগঠিত চক্র। তারা বিভিন্ন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্তাদের টার্গেট করে এই ধরনের প্রতারণা চালাত। ধৃতদের নাম নরপত সিংহ, রাজেন্দ্র সোনি, হরিশ কুমার। তাঁদের জেরা করে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখান থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। হাওড়া থেকে ধৃতদের নাম মনোহর, সংগ্রাম সিংহ, সুরজ, দিলীপ এবং জিতেন্দ্র। ধৃতেরা সকলেই রাজস্থানের জোধপুরের বাসিন্দা। ধৃতদের আজ আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়ে আরও বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল, প্রতারকদের নিত্যনতুন ফাঁদ থেকে বাঁচতে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে।