মঙ্গলবার, অর্থাৎ ৩ জুন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে এই মর্মে একটি যৌথ চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর আগে দিল্লীতে 'ইন্ডিয়া' জোটের শরিক দলগুলির একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, এই চিঠিতে 'অপারেশন সিঁদুর' সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, বিশেষ করে পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা, পুঞ্চ, উরি এবং রাজৌরিতে সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যু, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতির উপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে "গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন" উত্থাপন করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলো জানিয়েছে, তারা দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে রয়েছে এবং সরকারকে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংসদে পেশ করার আহ্বান জানিয়েছে।
বৈঠকে কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ ও দীপেন্দর হুডা, তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও'ব্রায়েন, আরজেডি-র মনোজ ঝা, সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব এবং শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে)-এর সঞ্জয় রাউত উপস্থিত ছিলেন। ডিএমকে-ও চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে, যদিও করুণানিধির জন্মবার্ষিকীর কারণে তারা বৈঠকে যোগ দিতে পারেনি। এছাড়াও ন্যাশনাল কনফারেন্স, সিপিআই(এম), সিপিআই, আইইউএমএল, আরএসপি, ভিসিকে, কেরালা কংগ্রেস, এমডিএমকে এবং সিপিআই (এমএল) লিবারেশন এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে। আম আদমি পার্টি (আপ) যদিও এই বৈঠকে অংশ নেয়নি, তবে তারা প্রধানমন্ত্রীকে একই দাবিতে একটি পৃথক চিঠি পাঠাবে বলে জানিয়েছে।
বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই পাহেলগাম হামলার পর 'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে বিতর্কের দাবি জানাচ্ছিল। এর আগে কেন্দ্র আয়োজিত একটি সর্বদলীয় বৈঠকেও এই দাবি উঠেছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জুন মাসেই বিশেষ অধিবেশন ডাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যখন বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান তুলে ধরতে যাওয়া প্রতিনিধি দলগুলি দেশে ফিরবে।
উল্লেখ্য, 'অপারেশন সিঁদুর' ছিল ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ভারতের সামরিক প্রতিক্রিয়া, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন। এই অভিযানের অংশ হিসেবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করে এবং পরে প্রতিবেশী দেশের বিমানঘাঁটিগুলিতে বোমা হামলা চালায়।
বিরোধী নেতারা বলছেন, সরকার সংসদের কাছে দায়বদ্ধ এবং সংসদ জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবিলম্বে সংসদে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। তারা মনে করেন, এই অধিবেশনের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীকে ধন্যবাদ জানানো যাবে এবং সরকার দেশের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ কৌশল সম্পর্কে জাতিকে জানাতে পারবে।