ইরানকে দেওয়া ৬০ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় এবং এর একদিন পরও কোনো সুরাহা না হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ইজরায়েলের প্রতি তাঁর অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্পের এই বার্তা বিশ্বজুড়ে পরমাণু চুক্তি নিয়ে নতুন করে জল্পনার সৃষ্টি করেছে।
ট্রাম্প সম্প্রতি এক বার্তায় বলেন, "ইরানকে সময় দিয়েছিলাম ৬০ দিন, আজ ৬১!" তার এই মন্তব্য ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ২০১৫ সালের জেসিপিওএ (Joint Comprehensive Plan of Action) বা ইরান পরমাণু চুক্তি ঘিরে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থাকে আরও জটিল করে তুলেছে। ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার পর থেকেই তেহরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে। ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির বিস্তার ঠেকাতে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হলেও, ট্রাম্প এটিকে একটি "ভয়াবহ চুক্তি" বলে অভিহিত করেছিলেন। তাঁর এই নতুন বার্তা ইরানের ওপর চাপ বজায় রাখার মার্কিন নীতিরই প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল যখন আন্তর্জাতিক মহল ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইরান চুক্তির শর্তাবলী লঙ্ঘন করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে, যা পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশ ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইজরায়েলের প্রতি ট্রাম্পের অনড় সমর্থন বরাবরই স্পষ্ট। ইজরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি বলে মনে করে এবং এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছে। ট্রাম্পের এই বার্তা ইজরায়েলের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। পরমাণু চুক্তি নিয়ে এখন কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইরান একদিকে যেমন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে, অন্যদিকে পরমাণু চুক্তির পুরনো পক্ষগুলো, যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীন, চুক্তিটিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ট্রাম্পের এই নতুন হুঁশিয়ারি চুক্তি পুনরুজ্জীবনের পথকে আরও কণ্টকময় করে তুলল বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।