লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠক: বিএনপিতে অস্বস্তি, আলোচনায় জামায়াত-এনসিপি ও জুলাই সনদ
লন্ডনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার আসন্ন বৈঠক ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনে ইউনূসের প্রস্থান করার আগেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সরকার এই বৈঠক গোপন রাখতে চাইলেও, ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম পরে বৈঠকটির প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন, যার পর সরকারি সূত্র থেকেও এর সত্যতা নিশ্চিত করা হয়। এই বৈঠককে কেন্দ্র করে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল আগ্রহ দেখালেও, বিএনপির উচ্চপদস্থ নেতৃত্ব এর সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে চিন্তিত বলে জানা গেছে। দলের বেশ কয়েকজন নেতা ইউনূস-তারেক বৈঠকের বিরোধী ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সরকার তারেক জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়টি নিয়ে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে, কারণ দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত তারেক প্রায় দেড় দশক আগে চিকিৎসার জন্য দেশ ছাড়ার সময় রাজনীতিতে না ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বৈঠকে অংশগ্রহণের আগে তারেক জিয়া ঢাকার স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মতামত জানতে চাইলে, তারা তাকে বৈঠকে অংশ নিতে এবং কোনো অযৌক্তিক প্রস্তাবে রাজি না হতে পরামর্শ দেন। বিএনপি শর্ত দিয়েছে যে, নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান যেন বৈঠকে উপস্থিত না থাকেন, যা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় মেনে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। লন্ডনের এই বৈঠকে প্রধান আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে দুটি: প্রথমত, আসন্ন নির্বাচনে জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে বিএনপির আসন বণ্টন এবং দ্বিতীয়ত, 'জুলাই সনদ' (July Charter)। ইউনূস এই দুটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিলেও, তারেক জিয়া চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে জোর দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যেখানে সরকার আগামী বছরের এপ্রিল মাসে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষপাতী। ইউনূস ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন যে নির্বাচন আগামী এপ্রিলের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে, তাই সম্ভাব্য নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে তারেকের মতামত শোনার ওপর তিনি জোর দেননি।