পাকিস্তানের অর্থনীতির করুণ দশা: শেহবাজ সরকারের স্বীকারোক্তি, ভারতের প্রতি উস্কানিই কি সর্বনাশ ডেকে আনলো?
একদিকে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়াতে ভারতের প্রতি একের পর এক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড, আর অন্যদিকে দেশের ভগ্নপ্রায় অর্থনীতি—এই দ্বিমুখী নীতিরই কি খেসারত দিতে হচ্ছে পাকিস্তানকে? সম্প্রতি শেহবাজ শরিফ সরকারের তরফে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেশটির অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের যে করুণ চিত্র উঠে এসেছে, তা দেখে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ মহল।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী, বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার প্রায় শূন্যের কোঠায়, এবং বেকারত্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, “দেশের আর্থিক অবস্থা এখন সংকটজনক, আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধ করাও দুষ্কর হয়ে পড়েছে।”
পাকিস্তান সরকার ফেডারেল বাজেট পেশ করার একদিন আগে, সোমবার (৯ জুন, ২০২৫) প্রকাশিত অর্থনৈতিক সমীক্ষায় এই তথ্য জানানো হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে জিডিপি বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৩.৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও, গত মাসেই তা ২.৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। আইএমএফ-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার ২.৬ শতাংশ এবং ২০২৬ অর্থবর্ষে ৩.৬ শতাংশ হতে পারে।
বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, সামরিক খাতে অযথা ব্যয় এবং প্রতিবেশী ভারতের বিরুদ্ধে লাগাতার উস্কানিমূলক পদক্ষেপই পাকিস্তানের অর্থনীতির পতনের অন্যতম কারণ। যখন খাদ্য ও জ্বালানির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখন সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা তৈরি করে সরকার জনগণের দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে বলেই অভিযোগ উঠেছে।
শেহবাজ সরকারের এই খোলাখুলি স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে, কূটনৈতিকভাবে নয়, বরং গঠনমূলক আর্থিক নীতির মাধ্যমে দেশ চালানোই এখন একমাত্র পথ। নাহলে আন্তর্জাতিক মহলের আস্থা হারিয়ে আরও গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে পাকিস্তান।
বিশ্লেষকদের মতে, এখন সময় এসেছে পাকিস্তানের আত্মসমালোচনার এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরানোর দিকে মনোযোগ দেওয়ার। অন্যথায়, শুধু প্রতিবেশীকে দোষারোপ করে নিজেদের দেউলিয়া দশা ঢেকে রাখা যাবে না।