সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে শাংরি-লা সংলাপে দেওয়া বক্তব্যে তিনি সতর্ক করেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল তাইওয়ান এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রভাব ফেলতে পারে। তার এই মন্তব্য তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইউরোপের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের গুরুত্বকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। ম্যাক্রোঁ তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন যে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন যদি বিনা বাধায় চলতে থাকে, তাহলে তাইওয়ানের মতো অঞ্চলে কী ঘটতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তিনি ইউরোপকে যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের নীতির 'অনুসারী' না হয়ে, তাইওয়ান ইস্যুতে একটি স্বাধীন এবং 'তৃতীয় মেরুর' অবস্থান গ্রহণের ওপর জোর দেন। তার মতে, ইউরোপের নিজস্ব কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখা উচিত এবং এশিয়ান অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা বাড়ানো প্রয়োজন। যদিও চীন ম্যাক্রোঁর এই মন্তব্যকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে তীব্র সমালোচনা করেছে। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাইওয়ান এবং ইউক্রেন সংকট সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির এবং এদের তুলনা করা উচিত নয়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে যে, তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটি সম্পূর্ণরূপে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর আগেও ২০২৩ সালের এপ্রিলে চীন সফর শেষে ম্যাক্রোঁ তাইওয়ান ইস্যুতে ইউরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর এবং নিজেদের স্বতন্ত্র নীতি অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই সময় হোয়াইট হাউস ফরাসি-মার্কিন সম্পর্কে আস্থা প্রকাশ করেছিল। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ম্যাক্রোঁর সাম্প্রতিক এবং পূর্বের মন্তব্যগুলো বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইউরোপের ক্রমবর্ধমান স্বাধীন ভূমিকা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়। তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ইউরোপের একটি সক্রিয় অথচ স্বতন্ত্র ভূমিকা জরুরি বলে মনে করেন ম্যাক্রোঁ।